চা না কফি?

 আজ বৃষ্টি ভেজা বেলায় যেন আলাদা একটা অনুভূতি হাত নাড়া দিয়ে গেল। বেরিয়েছিলাম কাঁদা জল এর মধ্যেই একটু কফি খাবো বলে। বাড়ির সামনে ক্যাফেতে খুব ভিড় দেখে ভাবলাম কি করা যায়।

হটাৎ একটা গানের সুর ভেসে এলো কানে। দেখি একটা পুরোনো রেডিও বাজছে একটা ঘুপচি ছাউনি তে। হটাৎ দেখলে চোখে নাও পড়তে পারে ছাউনিটা। একটা ছোট্ট চায়ের দোকান। সামনে বিস্কুট এর কাছের কৌটো সাজানো, তার উপরে রাখা বান পাউরুটির সারি। স্টোভ এ বসানো ডেচকিতে ফুটছে গরম চা। আর তার ধোয়া দেখা যাচ্ছে ছাউনির বাইরে। একটা লোক সেন্ড গেঞ্জি পরা, গুনগুন করে সুর ভাজছে আর চা তে মাঝে মাঝে নারা দিচ্ছে। সামনের গাছের তলার ফাঁকা বসার জায়গা। এগিয়ে গেলাম সেদিকে। চেনা সুরটা আরো স্পষ্ট হয়ে উঠলো। আমায় দেখে সে ভাঁড় এগিয়ে দিলো।

জিগেস করলাম কত। বললো পাঁচ টাকা। খুচরো পয়সা বের করতে গিয়ে বয়াম এর বিস্কুট দেখে ছোটবেলার কথা মনে পরে গেল। একটা

চাইলাম। সেই পাঁচ টাকা। একটা নোট বার করে চা হাতে বসলাম। দূরে কফির দোকানে এখনো ভিড়। তবে আজ মনে হলো ওই দুশো টাকার এক পেয়ালা কফির থেকে এই ভাঁড়ের চায়ের মূল্য অনেক বেশি।

তুমি আমার জীবনে সেই ভারের চা-টার মতন। বৃষ্টির দিন আর শীতের বেলায় স্নিগ্ধ উষ্ণ ছোয়া। একটুতে যেন মন ভরেনা। আজকাল জানো চা দেখলেই তোমার কথা মনে পরে। তোমার হাতের বানানো চা খেতে ইচ্ছা করে। কে জানে আমার বানানো চা তোমার কেমন লাগবে। মনে হয় কোনোদিন হয়তো ওরকম একটা ছাউনিতে বসে তুমি আর আমি ভাঁড় এর চায়ের মাঝে চোখে চোখ রেখে ছিনিয়ে নেব কিছু ফিরে না আশা মুহূর্ত। ওই চা এর মতো আমাদের ভালোবাসার সুগন্ধে ভেজা মনটা আবার জেগে উঠবে। জীবনের ছোট ছোট ফেলে আশা আনন্দ গুলো ফিরে পাবো আমরা। একে ওপরের হাত ধরে।

© Suranya

Comments